সর্বশেষ

» সিলেট-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল কাইয়ুম চৌঃ

প্রকাশিত: ৩১. জুলাই. ২০২৫ | বৃহস্পতিবার

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। তার ব্যতিক্রম নয় সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনও। এই আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ইতোমধ্যেই নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। যার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ও পরীক্ষিত জননেতা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে নেতাকর্মীদের মধ্যে আস্থার জায়গা তৈরি করেছেন। এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ‘ধানের শীষ’ নিয়ে অংশগ্রহণের প্রত্যাশা নিয়ে তিনি মাঠে নেমে গেছেন পুরোদমে।

একান্ত আলাপচারিতায় আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “সারা দেশের মানুষ আজ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। আমরা বিশ্বাস করি আগামী জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই বিশ্বাস থেকেই আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রস্তুতি শুরু করেছি। জনগণের ভোটাধিকারের পক্ষে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয়ভাবে আছি।”

তিনি আরো বলেন, “৫ আগস্টের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের সূচনা হয়েছে। এই আন্দোলন শুধু সরকারের পরিবর্তনের জন্য নয়, এটি দেশের জনগণের ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। আমরা যারা বিএনপির আদর্শে বিশ্বাস করি, তারা জানি- এই আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় একদিন হবেই। সে লক্ষ্যে আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখছি এবং জনগণকেও সেই স্বপ্নের সঙ্গে যুক্ত করছি।”

নির্বাচনী মাঠে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনিক কার্যক্রম সম্পর্কে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “ইতোমধ্যে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলায় বিশাল জনসভা করেছি। প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং গ্রামপর্যায়ে বিএনপির অবস্থান আরও সুসংহত করতে ধারাবাহিকভাবে গণসংযোগ করছি। জনতার দ্বারে দ্বারে গিয়ে বলছি—দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম কীভাবে আমাদের সকলের। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই আন্দোলন কেবল দলীয় স্বার্থের জন্য নয়, বরং দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্যই।”

তিনি বলেন, “আমরা লক্ষ্য করছি নতুন প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। দেশের যুবসমাজ, যারা প্রথমবার ভোটার হয়েছেন বা হতে যাচ্ছেন, তারা পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন। এই তরুণ প্রজন্ম যেন ভয়হীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে পারে, সে জন্যই তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করছেন। তরুণ ভোটারদের মাঝে বিএনপির বার্তা পৌঁছে দিতেই আমরা ঘরে ঘরে যাচ্ছি। কারণ, তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

নিজের রাজনৈতিক পথচলার কথা তুলে ধরে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “আমি ছাত্র রাজনীতি থেকেই বিএনপির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রদলের একজন কর্মী হিসেবে রাজপথে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছি। তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। রাজনীতি আমার কাছে কখনও ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার ছিল না। বরং সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের মাধ্যম হিসেবেই আমি রাজনীতিকে দেখি। রাজনীতি করার সময়েও আমি সব সময় মানুষের পাশে থেকেছি। করোনার সময় মাঠে ছিলাম, বন্যায় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। জনগণের ভালোবাসা আর তাদের আস্থাই আমার প্রকৃত শক্তি।”

তিনি বিশ্বাস করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক মাইলফলক হতে যাচ্ছে। কারণ, জনগণ অনেকদিন ধরে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। নির্বাচন ঘিরে মানুষের প্রত্যাশা, বিএনপির ভূমিকা এবং সরকারের দায়িত্ব নিয়ে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার ভয় পাচ্ছে বলেই সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বানচালের চেষ্টা করছে। কিন্তু জনগণের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা কখনোই দমন করা যায় না। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, ভোট দিতে চায়। বিএনপি জনগণের সেই অধিকার আদায়ে বদ্ধপরিকর।”

তিনি আরও বলেন, “আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় আমার যে ভালবাসা রয়েছে, সেটাই আমার রাজনীতির মূল শক্তি। মানুষের ভালোবাসার কাছে কোনো কৌশল বা টাকার ক্ষমতা টিকবে না। আমি তাদের পাশে আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। এবার দল যদি ধানের শীষ প্রতীক আমাকে দেয়, তাহলে জনগণের ভালোবাসা আর তাদের সমর্থন নিয়ে বিজয়ের পথে এগিয়ে যাব।”

আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, “আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, রাজনীতি মানে সেবা। আমি সেই ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন কর্মী, যিনি চেয়েছেন মানুষের পাশে থাকতে। এখনো সেই চিন্তাচেতনা নিয়েই রাজনীতি করি। তাই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। আমার লক্ষ্য একটাই—গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করা।”

সাক্ষাৎকারের শেষভাগে তিনি বলেন, “আমি আমার নির্বাচনী এলাকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে আমি আপনাদের দোয়া, ভালোবাসা ও সহযোগিতা চাই। দেশের এই কঠিন সময়ে আপনাদের সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। পরিবর্তনের লড়াইয়ে আমরা একসাথে থাকব।