সর্বশেষ

» তারেক রহমানের পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ওঠা, আর আমার কিছু কথা

প্রকাশিত: ০৩. আগস্ট. ২০২৫ | রবিবার

সাম্প্রতিক সময়ে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পাবলিক বাসে যাত্রার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সমর্থকেরা এই ছবিকে একজন নেতা হিসেবে তার সাদাসিধে জীবনের প্রমাণ হিসেবে দেখছেন। অপরদিকে সমালোচকেরা এটিকে লোক দেখানো বলে ব্যাখ্যা করছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন—যে মানুষ ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে প্রাইভেট বিলাসবহুল গাড়িতে গিয়েছিলেন, তিনি হঠাৎ লোকাল বাসে কেন? সেই গাড়ি কোথায় গেল?

তাদের জন্য বলি: ঐ গাড়িটি তারেক রহমানের নয়। সেটি ছিল কামাল উদ্দিন নামের এক বিএনপি নেতার—যিনি লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী এবং বনেদি সিলেটি পরিবারের মানুষ। বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে কাছের একজন নেতার গাড়িতে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরেই লন্ডনে একটি অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করছেন। যারা কাছ থেকে তাকে দেখেছেন, তারা এসব ছবি দেখে মোটেই অবাক হননি। আমিও না। আমি লন্ডনে কয়েকবার গিয়েছি, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে, এমনকি একবার তার সঙ্গেও কফি আড্ডার সৌভাগ্য হয়েছিল।

আমি দেখেছি—তার হাতে দামি আইফোন নেই, আছে দুটি সাধারণ চাইনিজ ব্র্যান্ডের ফোন। কাপড় নিজের হাতে ধুয়ে ইস্ত্রি করেন। ড্রাই ওয়াশে বাড়তি খরচ করতে চান না। পোশাকেও নেই কোনো জৌলুশ। এই মানুষটিকে কাছ থেকে না দেখলে শুধু মিডিয়ার নিউজ দেখে বোঝা যাবে না কে তিনি।

তবু প্রশ্ন আসে—তাহলে তার বিরুদ্ধে এত দুর্নীতির রিপোর্ট কোথা থেকে এলো?

সোজা কথা: এক-এগারোর সময় ‘প্রথম আলো’র মতিউর রহমান ও তার গোষ্ঠী যে মিথ্যাচার চালিয়েছিল, তার ফল আমরা এখনো ভোগ করছি। ৯৯% রিপোর্ট ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রোপাগান্ডামূলক। বাস্তবে, আমি যেটুকু দেখেছি এবং জেনেছি, তাতে তারেক রহমানের মধ্যে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সততারই প্রতিচ্ছবি দেখি।

আজ তিনি দেশের বাইরে, নিরাপত্তার ব্যূহ ছেড়ে স্বাধীন জীবনে। হয়তো সেই স্বাধীনতা, সেই হেঁটে যাওয়া, সেই বাসে চড়ার অনুভূতির মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন একটুখানি নিঃশ্বাস, নিখাদ আনন্দ। দেশে ফিরে আবার রাষ্ট্রের ভার কাঁধে নিতে হলে এই মুক্ত বাতাস হয়তো হারিয়ে যাবে।

তারেক রহমানের সেই দ্বিধা—মুক্তির টানে থাকা না রাষ্ট্রের দায়ে ফিরে যাওয়া—আজও হয়তো তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।

শেষ কথা: সমালোচনার আগে একটু জানুন, একটু বোঝার চেষ্টা করুন। একপেশে মিডিয়ার অপপ্রচারে নয়—মানুষটিকে বিচার করুন তার জীবনযাত্রা, মূল্যবোধ আর কর্মকাণ্ড দিয়ে।

লেখক : ইঞ্জিনিয়ার একেএম রেজাউল করিম

একজন নিয়মিত কলামিষ্ট, সমাজ সেবক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, মানবাধিকার কর্মী ও রাজনীতিবিদ।

চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্র।